মঙ্গলবার, ২০২৫ Jun ১৭, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
#
মহানগর মহানগর

করোনা

ঠাঁই নেই হাসপাতালে, চাপ সামলাতে পার্কভিউতে চালু নতুন করোনা ইউনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোরটিভি
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২১ জুলাই ২৪, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
#
ছবি : সংগৃহীত।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে ক্রমেই বাড়ছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। গত অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বেড়ে গেছে আইসিইউ সংকট। 

রাজধানীর মতো চট্টগ্রামেও প্রায় সব হাসপাতালেরই আইসিইউ শয্যা পরিপূর্ণ। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে সামনে বিনা চিকিৎসায় রোগী মারা যাবে।

শুধু আইসিইউই নয়, করোনা রোগী বাড়তে থাকায় সাধারণ শয্যায়ও পড়েছে টান। শয্যা সংকটে পড়েছে সেবাদানের বেসরকারি হাসপাতালগুলোও। এর মধ্যে ঈদুল আজহার আগের দিন থেকে করোনা রোগীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভর্তি সংখ্যা বাড়ছে জেনারেল রোগীরও—এমন তথ্য জানিয়েছেন কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


জানা যায়, নগরীর বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে পার্কভিউ হাসপাতাল, ম্যাক্স হাসপাতাল, ডেল্টা হাসপাতাল, ন্যাশনাল হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালেও ‘ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই’ অবস্থা রোগীর চাপে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনারোগীদের চাপ সামাল দিতে চট্টগ্রাম নগরীর কাতালগঞ্জ পার্কভিউ হাসপাতালে করোনার বিশেষায়িত দুটি ফ্লোরের পাশাপাশি চালু করেছে আরও একটি নতুন ফ্লোর। তবে রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এতেও হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি।

পার্কভিউ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনার শুরু থেকে এই হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবায় দুটি ফ্লোরে ৫২টি কেবিনে সেবার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও আইসিইউ ১২টি বেড, এইচডিইউ এবং হাই ফ্লো অক্সিজেন ব্যবস্থাও ছিল পর্যাপ্ত। কিন্তু ঈদুল আজহার আগে থেকে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় করোনারোগীদের জন্য বিশেষায়িত আরও একটি ফ্লোর চালু করেছে পার্কভিউ।

জানা গেছে, বিশেষায়িত ওই ফ্লোরে করোনা রোগীদের সেবায় নতুন কেবিন রয়েছে ২৬টি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, গত অন্তত তিন দিন ধরে রোগীর চাপ অনেক বেড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন রোগী ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছেন। সমানসংখ্যক রোগী যোগাযোগ করছেন আইসিইউর জন্য। আগের তুলনায় রোগীর অবস্থা সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে আইসিইউর জন্য অপেক্ষারত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ১২টি আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি থাকার পরেও দিনে ৩-৪ জন রোগী আইসিইউর জন্য অপেক্ষায় থাকেন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগীর স্বজনেরাও আইসিইউর জন্য যোগাযোগ করছেন। সবমিলিয়ে দৈনিক ১০-১৫ জন রোগীর স্বজন আইসিইউ শয্যার জন্য যোগাযোগ করছেন। বর্তমানে হাসপাতালে মোট ৮৪ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে। তার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ১২ জন।

পার্কভিউ হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার তালুকদার জিয়াউর রহমান জানান, ‘২৩ জুলাইয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী পার্কভিউ হাসপাতালে করোনার ৮৪টি কেবিনেই রোগী ভর্তি রয়েছেন। কোনো কেবিনই খালি নেই। ভর্তির অপেক্ষা নিয়ে সিরিয়ালে রয়েছে আরও ১৫ করোনা রোগী। ১২টি আইসিইউর কোন শয্যাই খালি নেই।’

তিনি বলেন, ‘করোনা রোগীর পাশাপাশি জেনারেল রোগীর চাপও বেড়েছে প্রচুর। ডেলিভারি রোগী, গ্যাস্ট্রোলিভার ও বুক ব্যাথার রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়েছে। জেনারেল ওয়ার্ডেও কোনো কেবিন ও সিট খালি নেই।’

এদিকে সবশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে ম্যাক্স হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জন প্রসাদ দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ৬৭টি কেবিন রয়েছেন। এর বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৬৯ জন। তার মধ্যে ১০ জন রোগী আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। দিনে ৭-৮ জন রোগী ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছেন।’ সূত্র : সিপি

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video