নিজেকে ‘অপহরণ’ করে বাবার কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি ছেলের

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২২ মে ২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন

এ যেন সিনেমার গল্প! পনেরো বছর বয়সী এক কিশোর নামাজের কথা বলে বের হয় বাড়ি থেকে। হঠাৎ সেই কিশোরের বাবার মোবাইল ফোনে আসে ক্ষুদেবার্তা।

অপহরণ করা হয়েছে তার ছেলেকে। দাবি করা হয় সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ। নইলে মিলবে ছেলের মরদেহ। কিছুক্ষণ পর পর আসতে থাকে এমন ক্ষুদেবার্তা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নিমজ্জিত মা-বাবা ছুটে যান পুলিশের কাছে। উদ্ধার হয় কিশোর। তবে ধরা পড়েনি অপহরণকারী। কারণ এ অপরহরণ নাটকের রচয়িতা কিশোর নিজেই।


গত শুক্রবার জুমার নামাজের কথা বলে রাজধানীর বাড্ডার বাসা থেকে বের হয় এ কিশোর। কিছুদূর সামনেই তাদের ফার্নিচার কারখানা। কিছুক্ষণ বসে থাকে সেখানে। পরে তাকে চলে যেতে দেখা যায়। নামাজ শেষ হওয়ার পর আর বাসায় ফেরেনি সেই কিশোর।


হঠাৎ তার বাবার মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদেবার্তা আসে। বলা হয়, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী। টাকা না পেলে হুমকি দেয়া হয় ছেলেকে মেরে ফেলার। একই রকম ক্ষুদেবার্তা আসে তার মামার মোবাইলেও। তবে সব মেসেজ আসে কিশোরের মোবাইল থেকেই। পাঠানো হয় নির্যাতনের ছবিও।

কোনো উপায় না দেখে বাবা ছুটে যান থানায়। প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা করা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশও।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দারা শনাক্ত করতে সক্ষম হয় অপরহণকারীর অবস্থান। এরই মধ্যে ওই কিশোরের বাবা অপহণকারীকে ২০ হাজার টাকা পাঠান। বিকাশের দোকান থেকে সেই টাকা তুলতে দেখা যায় কিশোরকে।


গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে গিয়ে দেখতে পান অপহরণকারী আর কেউ নয় খোদ ওই কিশোর। তার পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় এক কিশোরীকেও। উন্মোচিত হয় অপহরণ নাটক।

সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোর জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করেই অপহরণ নাটক সাজায় সে। বাসা থেকে বের হয়ে গাজীপুরে চলে যায় প্রেমিকার বাড়িতে। পরিকল্পনা ছিল তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার।

কিশোরীর দাবি অপহরণ নাটক সম্পর্কে জানতো না সে।

পুলিশ বলছে, বয়:সন্ধি অতিক্রম করা কিশোর নানারকম গেইমসে আসক্ত ছিল।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, অল্প বয়সে তারা ভিডিও গেমস খেলার মাধ্যমে এ ধরনের সংস্কৃতিতে মিশে যাচ্ছে। তারা অপহরণের নাটক সাজিয়ে নিজের বাবার কাছে চাঁদাবাজি করবে এবং অপহরণের মতো একটা ভয়ংকর ধারাতে মামলা রুজু হবে এটা খুব কষ্টকর।    

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, সন্তানরা কী করছে পরিবার থেকে এটি যদি ঠিকমতো মনিটরিং করা না হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো আমাদের জন্য অশনি সংকেত।  

ছেলের এমন কাণ্ডে বিব্রত বাবা-মা। এ বয়সের কিশোর-কিশোরীদের প্রতি বাবা-মাকে আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ পুলিশের।


সম্পাদক : মোহাম্মদ তাইফুর রিয়াজ
ব্যবস্থাপনা পরিচালক :  মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির
নির্বাহী সম্পাদক :   এম.এ কাইয়ুম 
উপ-সম্পাদক: মোঃ সামশুল কবির শাহীন

 

■ অফিস  :
প্রধান কার্যালয় : ২৪, গার্ডেন ভিউ, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লুফ রোড (লিংক রোড), ৬নং ব্রীজ, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : এম.এম টাওয়ার (৮ম তলা, লিফট-৭), সানমারের উত্তর পাশে, জিইসি মোড়, চট্টগ্রাম

মোবাইল : +8801894 78 50 10
ই-মেইল : dainikchattogramerpatabd@gmail.com

কপিরাইট © 2018-2024 দৈনিক চট্টগ্রামের পাতা
Design & Developed by Smart Framework